গাবলু মামা!
একদিন দুপুরে তিতলীর মা তার মামাকে বললেন, “যা তো গাবলু, সামনের মুদির দোকান থেকে দুই কেজি আলু নিয়ে আয়।”
গাবলু্মামা কঁকিয়ে উঠল, “আচ্ছা আপা, বাবা-মা কি আর নাম খুঁজে পেল না। গাবলু একটা নাম হলো? আমি এবার আমার নাম পাল্টাব।”
মা হা করে তাকিয়ে রইল। মামার দৃঢ় ধারণা এই নামের কারণেই তার চাকরি-বাকরি হচ্ছে না। তাই সিদ্ধান্ত নিয়েই ফেললেন নাম পাল্টানোর। তিতলীকে দেখে সবাইকে শুনিয়ে বললেন, “হ্যারে তিতলী, গালিব খান নামটা শুনতে বেশ লাগে, না?”
তিতলী কোনো ঝামেলায় না গিয়ে মামার কথায় সায় দেই।
বিকেলে মন্টিটা হাঁপাতে হাঁপাতে এসে বলল, “গাবলুমামা, জানো, আজ স্কুল ম্যাচে আমি দুটো গোল দিয়েছি।”
মামা বিছানা থেকে তড়াক করে লাফিয়ে উঠে বলল, “দেখ মন্টি, আমি এখন আর তোদের গাবলুমামা নই। আমি এখন গালিব খান।”
রাতে খাবারের টেবিলে সবার সামনে কথাটা উঠতেই তিতলীর বোন ফিক করে হেসে দিল। মামা একটা গাট্টা মারতেই ও চুপ হয়ে গেল।
বাবা গম্ভীর হয়ে বললেন, “মুখে বললে তো হবে না, গাবলু। এফিডেবিট করে আইনমাফিক করতে হবে। বাপ-দাদার নাম পাল্টানো অত সহজ নয়।”
“তাই না হয় করা হোক।” - বুড়ো আঙুল দেখিয়ে সায় দিল তিতলীর ভাই। মামার সবচেয়ে ভালো বন্ধু। মামা-ভাগ্নে বলে কথা। তাদের বাবা আর কথা বাড়ালেন না।
পরদিন বিকেলে কলিংবেল বাজতেই কাজের ছেলে বাদল দৌড়ে গেল। মা চেঁচিয়ে বললেন, “কে এসেছে রে বাদল?”
বাদলের চটপট উত্তর, “গাবলুমামা।”
ঘরে ঢুকেই মামা বাদলকে এমন ধমক লাগলেন, “খবরদার আর কখনো গাবলুমামা বলবি না। আমি এখন গালিব খান।”
বেচারা বাদল পালিয়ে বাঁচল। ঠিক দুসপ্তাহ পরের ঘটনা। রাতে খাবার টেবিলে বসে সবাই খাচ্ছি। মা, মামার দিকে তাকিয়ে মন খারাপ করে বললেন, “তোর আর চাকরি হলো না।”
বাবা বললেল, গাব... সরি, মিস্টার গালিব তোমার ওই সিম্পসন কোম্পানির চাকরির কী হলো? ওটা তো হওয়ার কথা।”
মা খাওয়া বন্ধ করে বললেন, “এখনও তো কোনো চিঠিপত্তর এলো না।”
চিঠির কথা শুনেই রান্নাঘর থেকে বাদল বেরিয়ে এসে জানাল, “একটা চিঠি এসেছিল মামার নামে।”
বাদল হাসি হাসি মুখে বলল, “লোকটা কইলো, এখানে গাবলু খান নামে কেউ থাকেন?”
আমি সোজা না জবাব দিয়া কইলাম, “আমারে আপনি মার খাওয়াইতে চান?”
মামা তিন লাফে বাদলের কাছে গিয়ে বললেন, “হায়! হায়! কী করেছিস, নিশ্চয়ই ওটা আমার অ্যাপয়ন্টমেন্ট লেটার ছিল। এখন কী হবে!” -বলেই মামা মাথা চাপড়াতে লাগলেন।
মা এইবার রেগে গিয়ে বললেন, “দেখলি বাবা-মার অমর্যাদা করলে কী ফল হয়!