তেলবাজি

তেলবাজি


আমাদের ক্লাশে এক ছেলে পড়ে। নাম মুন্না। কথা বার্তায় খুবই ধীর স্থির ও ভদ্র ছেলে। তবে মেয়ে দেখলে নজর একটু এদিক সেদিক হয়ে যায় আর কি। কি আর করবে বয়সের দোষ। গল্পের আরেক চরিত্র আমাদের সবার প্রিয় চর্ম ও যৌন বিভাগের অধ্যাপক ডাক্তার ও কবি বি.জামান স্যার ( বিশাল ভুরি, এতোই বড় যে কোট পড়লে আর বোতাম লাগাতে পারেন না আর মাথা ভর্তি পরচুলা )। তো স্যারের সাহিত্য প্রেম এমনই যে, তিনি প্রতি বছর যেসব অখাদ্য কবিতা লিখবেন তা আবার উনি বিশাল এক অনুষ্ঠান করে সবাইকে ফ্রি চাইনিজ খাবার খাইয়ে তার প্রকাশ ঘটাবেন।

তো এইসব অনুষ্ঠান আয়োজনে স্যারের ডান হাত হলো আমাদের মুন্না ভাই। একদিন একটি অনুষ্ঠানের আগে স্যার মুন্নাকে ডাক দিলেন-

স্যারঃ মুন্না, এই সিডিটা রুমে নিয়ে যাও, এখানে আমার লেখা ও সুর করা একটি গান একজন শিল্পীকে দিয়ে গাইয়েছিলাম। শুনে আমাকে জানাও তো কেমন হয়েছে।

মুন্নাঃ স্যার, আমি না শুনেই বলে দিতে পারি এই গান রেডিও, টেলিভিশনে দিলে ফাটাফাটি হিট হবে। তারপরেও আপনার কথায় রুমে গিয়ে আরও ভালো মত শুনবো।

তো মুন্না স্যারকে কিঞ্চিত পাম তেল দিয়ে নিজের রিক্সা ভাড়াটা আদায় করে নিলো। পরেরদিন স্যার অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী সবাইকে নিজের চেম্বারে ডেকেছেন, মুন্নাও হাজির।

মুন্নাঃ স্যার, আপনাকে যে কি বলবো আমি! এতো সুন্দর গান আমার জীবনেও শুনি নাই। বর্তমানে যারা গান গায় এদের উচিত আপনার লেখা ও সুর করা। আপনি বিশ্বাস করবেন কিনা জানি না স্যার, আমি রাত্রি ১২ টা থেকে শুরু করে ভোর পর্যন্ত বার বার আপনার এই গান শুনেছি,পড়ে গান শুনতে শুনতেই ঘুমিয়ে পড়লাম।

মুন্নার মত স্বল্পভাষী, ভালো ছেলের মুখে এহেন প্রশংসামূলক বক্তব্য শুনে স্যারের শার্টের বোতামগুলো ও মারে, বাবারে করা শুরু করে দিয়েছিলো। আর স্যারের ভুরিও রুমের ছাদ ছুই ছুই করছিলো।

স্যারঃ তাহলে তো মুন্না আমার এই গানটি উপস্থিত সবাইকেই শুনাতে হয়।

মুন্নাঃ মুখ একটু কাচু-মাচু করে, অবশ্যই স্যার।

তো স্যার সিডিটি নিয়ে উনার ল্যাপটপে ঢুকালেন কিন্তু অনেক চেষ্টা করেও গান বাজাতে সক্ষম হলেন না। (সবার ধারনা সিডিতে মনে করলেন স্ক্রাচ সংক্রান্ত ঝামেলা হয়েছে )। অবশেষে বিরক্ত হয়ে স্যার সিডিটি ল্যাপি থেকে বের করে ভালোমত চেক করে দেখলেন। তারপর মুন্নার দিকে তাকিয়ে বললেন-

স্যারঃ মুন্না,আমি তোমাকে ভুলে ব্ল্যাংক সিডি দিয়েছিলাম।

এই কথা শুনে উপস্থিত সবাই…….