জিপার কোথা থেকে এলো?

জিপার কোথা থেকে এলো?


এক হাতে বোতাম লাগাবার চেষ্টা করেছ কখনো, ভারি কষ্ট। কিন্তু প্যান্টে বা জ্যাকেটে যদি জিপার লাগানো থাকে, তা হলে? একটানে খোলো আর একটানে আটকাও। সেই জিপার এখন ব্যাগে, সুটকেসে—সর্বত্র। কিন্তু এমন কৌশলটা কার মাথায় প্রথম এল?

প্রায় একশো বছর আগে থেকে চেষ্টা চলছে এমনিতরো কিছু-একটা বের করার। ১৮৯৩ সালে একটা কার্যকর জিনিস উদ্ভাবন করলেন শিকাগোর জনৈক ইঞ্জিনিয়ার–হোয়াইট কোম্ব। তিনি প্যাটেন্ট করলেন স্লাইড ফাশেনার নামক জিনিস যা উঁচু গামবুট ধরনের জুতায় লাগানো হত। এতে একপাশের সঙ্গে অন্যপাশ ঘষে তুলে আনলে দুটো পরস্পরের সাথে আটকে যেত। সমস্যা হত— এটা নানা জিনিসের সঙ্গে লেগে এমনিতেই খুলে যেতে পারত। তাই আরো উন্নত কিছুর দরকার হল।

Zipar

আজকের ধরনের জিপার উদ্ভাবন করলেন সুইডেনের ড. সুক্তবাক ১৯১৩ সালে। তিনি দুই সারি ধাতুর ক্ষুদ্র তালামতো জিনিসের প্রত্যেকটিকে কাপড়ের মতো নমনীয় কিছুর উপর সেঁটে নিলেন। দুই সারিকে কাছে এনে দাঁতে দাঁত ঢুকিয়ে এদের আটকে দেয়া হল। একটা আংটা একদিক থেকে টেনে নিয়ে এটা করা হল। যতক্ষণ-না আংটাটা আবার ফিরিয়ে আনা হচ্ছে—দুই সারি আলাদা হবার উপায় নেই।

উদ্ভাবনের পরে-পরেই প্রথম মহাযুদ্ধ শুরু হল। যুদ্ধের সময় যাবতীয় খোলাবাঁধা যত দ্রুত করা যায় ততই মঙ্গল। তাই আমেরিকান আর্মি থেকে মোটা অর্ডার এল জিপার তৈরির। সেই থেকে জিপার যে কত তৈরি হচ্ছে তার সীমা-পরিসীমা নেই। জিপার নামটির উৎপত্তি-কাহিনীও মজার। ঔপন্যাসিক গিলবার্ট ফ্রাঙ্কম্যান এক আড্ডায় নূতন বের হওয়া জিপার দেখে খুব চমৎকৃত হয়ে পড়েছিলেন। খুব উচ্ছ্বাসভরে তিনি সবাইকে বললেন : কী মজা, জিইপ—এই খুলে গেল, জিইপ—এই বন্ধ হল। সেই থেকে সবাই একে জিপার ডাকে।