কাঠবিড়াল কি উড়তে পারে?

কাঠবিড়াল কি উড়তে পারে?


কাঠবিড়াল এক অতিপরিচিত প্রাণী। এখানে-সেখানে পার্কে, গাছগাছালির কাছে প্রায় সর্বত্রই ওদের দেখা যায়। অস্ট্রেলিয়া ছাড়া পৃথিবীর সকল দেশেই কাঠবিড়াল আছে। কাঠবিড়ালের প্রকারভেদ অনেক। ওদের কেউ-কেউ বিড়ালের মতো বড় হয়। আবার কোনো-কোনো কাঠবিড়ালের আকার হয় ইঁদুরের মতো। সাধারণত ওদেরকে দুটো শ্রেণীতে বিভক্ত করা হয়, যথা -  মাটিতে থাকা-কাঠবিড়াল (Ground Squirrel) ও গাছে থাকা কাঠবিড়াল (Tree Squirrel)। এই দুটি প্রধান শ্রেণী বাদেও আর-একপ্রকার কাঠবিড়াল আছে। ওই কাঠবিড়ালগুলি ‘উড়ন্ত কাঠবিড়াল' (Flying Squirrel) বলে পরিচিত।

Flying squirrels

চিত্রঃ- উড়ন্ত কাঠবিড়াল

উড়ন্ত কাঠবিড়ালের প্যারাসুটের মতো পাতলা পরদা থাকে। ওই পরদা ওদের দেহের উভয়পাশে, সামনে ও পিছনের অঙ্গের সাথে সংযুক্ত থাকে। যখন ওরা ওদের পা বিস্তৃত করে, তখন গ্লাইডারের (ইঞ্জিনবিহীন বিমান) ডানার মতো ওই পরদা ঝাপটা খায় বা আন্দোলিত হয়। এর ফলে হাওয়ায় ওরা ভেসে চলতে পারে। হাওয়ায় ভেসে চলাকালে যদি পেঁচা বা অন্যকোনও শত্রুকর্তৃক আক্রান্ত হয় তা হলে ওরা সঙ্গে সঙ্গেই আবার গাছে ফিরে আসে এবং গাছের গুঁড়িতে লুকিয়ে নিজেদেরকে রক্ষা করে।

আজ পর্যন্ত মানুষ প্রায় ৩৫ প্রজাতির উড়ন্ত কাঠবিড়ালের কথা জেনেছে। উত্তর আমেরিকা, আফ্রিকা, ইউরোপ এবং এশিয়ার কোনও-কোনও অংশে ওদেরকে দেখতে পাওয়া যায়। আমরা ওদেরকে খুব কমই দেখতে পাই। তার কারণ, সাধারণত ওরা দিনের বেলায় ঘুমিয়ে কাটায়। ওদের গায়ে কোমল লোম থাকে। চোখদুটো হয় বেশ বড় বড়।

লেজ বাদে এদের দেহের দৈর্ঘ্য ৮ থেকে ৬০ সেন্টিমিটার। গাছের উপরেই ওরা বাস করে এবং ফলমূল, সুপারি, পোকামাকড় ও উদ্ভিদ খেয়ে জীবনধারণ করে। অন্যদের মতো এরা নিচে আসে না। খুব কমই ওদেরকে মাটিতে আসতে দেখা যায়। উড়ন্ত কাঠবিড়ালেরা নিশাচর—অর্থাৎ ওরা রাতে ভালো দেখতে পায়। উড়ন্ত এই কাঠবিড়ালেরা হাওয়ায় ভেসে ৬০ মিটার (প্রায় ২০০ ফুট) পর্যন্ত চলতে পারে।