হেরে গেলে সব শেষ নয়!

হেরে গেলে সব শেষ নয়!


৫ বছর বয়সে একটি ছেলের বাবা মারা যান। ১৬ বছর বয়সে সে স্কুলের ফি দিতে না পারায় স্কুল থেকে বিতাড়িত হন । আর বয়স ১৭ তে সে পর্যায়ক্রমে চারটি চাকরি হারাতে থাকে। মাত্র ১৮ বছর বয়সে সে বিয়ে করেন, ঐসময় সে রেলরোড কন্টাক্টর হিসেবে কাজ করতেন। যখন তার বয়স ১৯, তখন সে একটি কন্যা শিশুর বাবা হন। ২০ বছর বয়সেই তার স্ত্রী তাদের একমাত্র মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে তাকে ছেড়ে চলে যায়। ২২ বছর বয়সে সে সেনাবাহিনীতে চাকরি নেন। একই সাথে সে ‘ল’ স্কুলে এপ্লাই করেন এবং বারবার সেখান থেকে রিজেক্ট হতে থাকেন। ইতোমধ্যে সে তার চাকরিও হারান।

এরপর সে ইনস্যুরেন্স কোম্পানিতে সেলসম্যান হিসেবে কাজ শুরু করেন। তার বিশৃঙ্খল ক্যারিয়ার জীবনে আরও একটি ব্যর্থতা যোগ হয়। তারপর সে একটি ছোট ক্যাফেতে বাবুর্চির কাজ করবেন বলে সিদ্ধান্ত নিলেন। ৬৫ বছর বয়সে সে সেখান থেকে অবসর গ্রহণ করেন। অবসর নেওয়ার প্রথম দিন সরকারীভাবে ১০৫ ডলারের একটি চেক হাতে পান। এটি যেন যেন বৃদ্ধ বয়সে গালে চড় মারার মত অবস্থা। সে মারাত্মক অসহায় হয়ে পরলেন। মাসিক মাত্র ১০৫ ডলার দিয়ে কীভাবে সে গোটা মাস সারভাইভ করবেন? সে ভেবে কূলকিনারা খুঁজে পান না।

একজন চূড়ান্ত ব্যর্থ মানুষের পরিণতি তার। সে আত্মহত্যা করার সিদ্ধান্ত নেন। একটি গাছের নিচে বসে তার সুইসাইডাল নোট লিখছিলেন। লিখতে লিখতে হঠাৎ করে তার মনে হয়, সে কি কি করতে পারতেন, যেগুলো করেননি? সুযোগ ছিল কি তার জীবনকে অন্যভাবে সাজাবার? সে এটা অন্তত উপলব্ধি করতে পারলেন, তার অনেক কিছু করার ছিল।

একটা ব্যাপারে নিশ্চিত হলেন যে, এমন কিছু সে করতে পারেন, যেটা অন্য কেউ কখনো করতে পারবে না। বলতে গেলে সে সেই কাজটা অন্য সবার চেয়ে সবচেয়ে ভালো করতে পারতেন । সেটা ছিল রান্নার কাজ ! এমন চিকেন রেসিপি সে জানেন তার স্বাদ এখনো কেউ পায়নি। সে ৮৭ ডলার ধার করে একটি কড়াই ও তার চিকেন রেসিপির উপকরণগুলো কেনেন। একপর্যায়ে সে তার সেই অদ্বিতীয় চিকেন ফ্রাইড রেসিপিটি তৈরি করলেন। প্রতিবেশীদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে তার তৈরি খাবারটি বিক্রি করার চেষ্টা করেন । একই সাথে রেসিপিটি বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে চালানোর চেষ্টা করতে থাকেন। এবারও সে ব্যর্থতার বৃত্তে ঘুরপাক খাচ্ছেন, ১০০৯ বার সে বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে তার রেসিপি চালানোর চেষ্টা করেছিলেন । অবশেষে ১০১০ তম রেস্টুরেন্ট টি তার ডাকে সাড়া দেয়। তারপর KFC এর জন্ম হলো। 

হুম, গল্পটি কলনেল স্যান্ডার্সকে নিয়ে, যিনি বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান KFC এর প্রতিষ্ঠাতা। বর্তমানে ১২৩ টি দেশে ২০,০০০ এর বেশি লোকেশনে KFC এর বিস্তার। ৮৮ বছর বয়সে কলনেল স্যান্ডার্স কয়েক বিলিয়ন ডলারের মালিক হয়ে উঠেন । আর তার প্রতিষ্ঠান KFC হয়ে উঠে পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম খাবারের সম্রাজ্য ।

মূল কথাঃ-

সফল হওয়ার সব উপকরন-ই আপনার আছে। কখনো হাল ছাড়বেন না। আপনার স্বপ্ন দেখার সময় ফুরিয়ে যায়নি এখনো। বুনো স্বপ্নগুলোর পেছনে ছুটতে থাকুন, এখনি। হ্যাঁ, এখনই। সবসময় নিজের উপর বিশ্বাস রাখুন । আপনি নিজেকে বিশ্বাস না করলে কেউ আপনার উপরে বিশ্বাস রাখবে না। ব্যাপার না, আপনি কতবার হেরে যাচ্ছেন। ভিন্ন কিছু করুন এবং অন্যদের দেখিয়ে দিন ।


Report This Post

All sources, including information, images, and videos, for our posts are listed here . If there are any copyright claims, please report this post or contact us or mail at info@beeblogquester.com.