বিজ্ঞানী আইনস্টাইন

বিজ্ঞানী আইনস্টাইন


আইনস্টাইন এ-যুগের একজন মহাবিজ্ঞানী এবং অঙ্কশাস্ত্রে উঁচুমাপের পণ্ডিত। জাতে ইহুদি, বাড়ি জার্মানি কিন্তু নাৎসিদের অত্যাচারে শেষজীবনে দেশত্যাগী হয়ে আমেরিকার বাসিন্দা হন তিনি। তাঁর আবিষ্কৃত 'আপেক্ষিক তত্ত্ব' তাঁকে অমর করে রেখেছে। অতবড় বিজ্ঞানী অথচ চালচলন ছিল তাঁর অতি সাধারণ। টাকাপয়সার দিকে মোহ ছিল না। একেবারে ১৯২১ সালে তাঁকে নোবেল পুরস্কার দেয়া হয়। পুরস্কারের সব টাকাই নাকি তিনি দান করে উড়িয়ে দেন।

একবার কোনো-এক প্রতিষ্ঠান তাঁকে সম্মান দেখাবার জন্য সাতশো ডলারের একটা চেক পাঠিয়ে দেয়। আইনস্টাইন সেটা ব্যাংকে জমা না দিয়ে বই-এর পৃষ্ঠাচিহ্ন হিসেবে ব্যবহার করতে লাগলেন। তারপর একদিন সেটা কোথায় হারিয়ে গেল। আইনস্টাইন কিন্তু তাতে কিছুমাত্র বিচলিত হলেন না।

কোথাও যেতে হলে আইনস্টাইন সাধারণের মতো বাস বা ট্রামে চড়েই যাতায়াত করতেন। ট্রেনে গেলে বেশিরভাগ সময় থার্ডক্লাসেই যাতায়াত করতেন তিনি।

একবার এক মজার কাণ্ড ঘটল। বেলজিয়ামের রানি ছিলেন আইনস্টাইনের বড় ভক্ত। তাঁরই আমন্ত্রণে আইনস্টাইন ব্রাসেল্স্-এর উদ্দেশে ট্রেনে চেপে বসেছিলেন। ব্রাসেল্‌স্ স্টেশনে নেমে দেখেন প্ল্যাটফরম, আশপাশ লোকে লোকারণ্য। ব্যাপার কী! তিনি ভিড়ের দিকে না গিয়ে তাঁর সুটকেস আর শখের বেহালাটি নিয়ে সন্তর্পণে পাশ কাটিয়ে স্টেশন থেকে বেরিয়ে এলেন, পায়ে হেঁটেই। আসলে স্টেশনে ঐ-যে ভিড় হয়েছিল তা কিন্তু তাঁকে দেখার জন্যই, তাঁকে অভ্যর্থনা জানাবার জন্য। রানি তাঁকে আনার জন্য দামি গাড়ি আর লোকজন পাঠিয়েছিলেন স্টেশনে। স্টেশন থেকে খালি গাড়ি ফিরে এল।

আইনস্টাইন আসেননি শুনে রানি ভারি ক্ষুণ্ন হলেন। এমন সময় দেখা গেল একটি লোক সারাগায়ে ধুলো মেখে, এক হাতে সুটকেস, অপর হাতে একটি বেহালা নিয়ে শিস দিতে-দিতে এগিয়ে আসছেন গুটিগুটি।