কোরআনের মর্যাদা!
মসজিদে আছরের আযান হচ্ছিল। তাই ইমাম সাহেব তার ঘর থেকে বের হয়ে মসজিদে প্রবেশ করলো। নামাজের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এমন সময় তিনি লক্ষ্য করলে প্রতিদিনের মতো আজকেও একটি বৃদ্ধা মহিলা মসজিদের সামনে ভিক্ষার উদ্দেশ্যে এসে দাঁড়ালো।
বৃদ্ধাটি প্রতিদিন ভিক্ষা করতে আসে অথচ সে একটি স্বচ্ছ পরিবার থেকে আসা। বিষয়টি ইমাম সাহেবকে খুবই কৌতূহল করলো। তাই ইমাম সাহেব নামাজ শেষে বৃদ্ধা মহিলার কাছে আসলেন।
ইমাম সাহেব প্রথমে সালাম দিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, আপনি ভিক্ষা করেন কেনো? আপনার পরিবার তো খুবই স্বচ্ছল! মহিলা বললেন, হুজুর আপনি তো জানেন, বেশ কয়েক মাস হলো আমার স্বামী মারা গেছেন। আর এখানে আমি একা। বৃদ্ধা মহিলার একটি ছেলে ছিল। সে বিদেশে ভালো একটা চাকরিও করে।
তখন হুজুর বললেন, আপনার ছেলে কি আপনাকে টাকা পয়সা দেয় না? মহিলা বললেন, সে আমাকে মাস কয়েক আগে টাকা পাঠিয়েছিলো। কিন্তু এখন আর কোনো টাকা-পয়সা পাঠায় না। শুধু কিছু রঙিন কাগজের ছবি পাঠায়। আর আমি এইগুলো খুব যত্ন করে রাখি।
হঠাৎ করে টাকা পাঠানো বন্ধ করে রঙিন কাগজের ছবি পাঠায়, বিষয়টি হুজুরের কাজে খুবই ঘটকা মনে হলো। তাই তিনি বৃদ্ধাকে বললেন, আপনি যদি কিছু মনে না করেন, তাহলে আমি আপনার সাথে আপনার বাসায় যেয়ে রঙিন কাগজের ছবিগুলো দেখতে চায়! আর বুঝতে চায়, "কেন আপনার ছেলে টাকা পাঠানো বন্ধ করে এসব পাঠাচ্ছে।
বৃদ্ধা মহিলা তখন হুজুরকে বাসায় নিয়ে গেলেন। আর রঙিন কাগজের ছবি গুলো দেখাচ্ছেন। হুজুর তো এগুলো দেখে অবাক। কারণ এগুলো হলো 'ডলার'। প্রতিটা নোটই হলো এক হাজার ডলারের একটি নোট। এরকম অসংখ্য নোট মহিলার ঘরে সাজানো ছিল।
কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো, মহিলাটি অশিক্ষিত হওয়াই এই রঙিন কাগজের ছবির বিষয়ে তিনি কিছুই জানতেন না। আর কাউকে দেখানোর প্রয়োজন মনে করেননি। অথচ তিনি নিজেও জানতেন না যে, তার ঘরে কত টাকা সাজানো আছে। এই সম্পদ তিনি ঘরে রেখে রেখে চুমু খান আর বাহিরে কত কষ্ট করে ভিক্ষার টাকায় তার জীবন চালান।
মূলভাবঃ
আমরাও আমাদের ঘরে পবিত্র কোরআন শরীফ সাজিয়ে রেখে দিই। কত চুমু খাই। অথচ এটি যে কত মহামূল্যবান তা আমরা বোঝার চেষ্টাও করি না। আমরা ঐ বৃদ্ধা মহিলার ন্যায়, মহামূল্যবান গ্রন্থ কাছে রেখেও তা কদর খুঁজছি না।