
বুখারাঃ সিল্ক রোডের সমৃদ্ধ শহর।
ইমাম বুখারী, ইবনে সিনা, সুফি বাহাউদ্দিন নকশবন্দি সহ আরও অনেক বিখ্যাত ব্যক্তির নাম জড়িয়ে আছে যে শহরটির সাথে সেটা হচ্ছে বুখারা। ইসলামী স্বর্ণযুগে বুখারা ছিল জ্ঞান বিজ্ঞান চর্চার অন্যতম তীর্থস্থান। পৃথিবীর নানান প্রান্ত থেকে শিক্ষার্থীরা বুখারা যেত জ্ঞান অর্জনের জন্য।
বুখারার কেন্দ্রীয় মাদ্রাসা এত বিশাল ছিল যে সেখানে একসঙ্গে সহীহ বুখারী শিক্ষা নিত ৪ হাজারের মতো ছাত্র। এমনকি সেখানকার মাদ্রাসায় ৩০ থেকে ৪০ হাজার ছাত্র পড়াশোনা করতো।
সিল্ক রোডের সমৃদ্ধ শহরগুলোর মধ্যে অন্যতম ছিল বোখারা। ২২০০ বছর আগে থেকে সিল্ক রোড বাণিজ্যিক পথ হিসেবে পূর্ব অর্থাৎ এশিয়াকে সংযুক্ত করেছিল পশ্চিম অর্থাৎ ইউরোপের সাথে। শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে এর সরাইখানা গুলোতে যেমন ব্যবসায়ীদের আগাগোড়া ছিল, তেমনই শহরটি বহু দেশে তার গোড়ায় পদদলিত হয়েছিল।
১২২০ খ্রিস্টাব্দে মানব সভ্যতার ইতিহাসে ভয়াবহ এক নির্মমতার শিকার হয়েছিল বুখারা। বুখারা দীর্ঘদিন ধরে মধ্য এশিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ছিল। প্রথমদিকে বুখারা পারস্য সাম্রাজ্যের অন্তর্গত ছিল। এরপর আলেকজান্ডার দ্যা গ্রেট শহরটি দখল করেন। বুখারিকে ইসলামি শাসনের অধিকার তে প্রথম পদক্ষেপ নেন উমাইয়া খলিফা হযরত মোয়াবিয়ার সময় খোরাসানের গভর্নর ওবায়দুল্লাহ বিন জিয়াদ। কিন্তু তিনি ব্যর্থ হন।
এরপর খলিফা ওয়ালিদ ইবনে আবদুল মালিক এর সময় ৭০৯ খ্রিষ্টাব্দে খোরাসানের আরেক গভর্নর কুতাইবা ইবনে মুসলিম ইসলামী শাসনের অধীনে নিয়ে আসেন। এরপর মুসলিম ধর্মপ্রচারকরা শুরু করেন ইসলাম প্রচার। গড়ে ওঠে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
নবম শতাব্দীতে আব্বাসীয় খিলাফতের অধীনে ঘোড়াশাল সাবারি দাবিরাতে উত্থান ঘটে। ৮৫০ খ্রিস্টাব্দে বুখারা সাবারি দাবিরাতে রাজধানীর মর্যাদা পায়। এসময় ইসলামি জ্ঞান বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি চর্চার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠে বোখারা।
হাদিসের বিশুদ্ধ গ্রন্থ সহীহ বুখারী বা বুখারী শরীফের সংকলক ইমাম মুহাম্মদ ইবনে ইসমাইল আল বুখারী এই সময় বুখারাতে জন্মগ্রহণ করেন।