কাতুকুতু দিলে হাসি পায় কেন ?

কাতুকুতু দিলে হাসি পায় কেন ?


কাতুকুতু দিলে হাসি পায় না এমন ব্যক্তি প্রায় বিরল। সুড়সুড়ি বা কাতুকুতু দিলে মানুষ উন্মাদের মতো হাসে কেন? কী বলছেন বিজ্ঞানীরা?

কাতুকুতু লাগলে মানুষের দেহে যে প্রতিক্রিয়া হয়, দীর্ঘদিন ধরেই তার কারণ অনুসন্ধানের জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছিলেন বিজ্ঞানীরা। কাতুকুতু দিলে কি জন্য মানুষ হেসে ওঠে,বিজ্ঞানীরা এখনও পর্যন্ত সেই কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত কোনো বর্ণনা দিতে পারেননি। তবে তারা বলেন যে, স্নায়ু উদ্দীপিত হওয়া এবং মস্তিষ্ক সচল হওয়ার ফলেই কাতুকুতুর কারণে হাসি পায়।

মানুষের ত্বকের বাইরের অংশটিকে বলা হয় এপিডার্মিস। যেখানে কেউ স্পর্শ করলে সেখানে থাকা স্নায়ুর শেষ অংশগুলো আমাদের ব্রেনে ইঙ্গিত পাঠায়। গবেষকেরা FMRI (Functional Magnetic Resonance Imaging) ব্যবহার করে দেখেছেন ব্রেনের দুইটি ভাগ এই কাতুকুতু অনুভূতির জন্য দায়ী। 

  1. সোমাটোসেন্সরি কর্টেক্স - যা স্পর্শকে বিশ্লেষণ করে। 
  2.  এন্টেরিয়র সিঙ্গুলেটেড কর্টেক্স -যা আনন্দ অনুভূতি সৃষ্টি করে।

এছাড়াও সুড়সুড়ি ও জোকস শুনলে  আমাদের  হাসি পায় তার জন্য ব্রেনের আরেকটা অংশ দায়ী তা হলো রোল্যান্ডীক ওপারকুলাম। এটা সাধারণত হাসির সময় আমাদের মুখের নাড়াচাড়া,কন্ঠ এবং ইমোশনকে নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।

কোথায় বেশি কাতুকুতু বা সুড়সুড়ি অনুভূতি বেশি থাকে? 

সাধারণত, শরীরের যে অংশগুলিতে হাড় থাকে না, সেই অংশগুলিতে কাতুকুতুর বা সুড়সুড়ি অনুভূতি বেশি হয়ে থাকে। যেমন বগলে, পেটের সাইডে বা পাদদেশে কিংবা পায়ের পাতার নিচে।

নিজে কাতুকুতু বা সুড়সুড়ি দিলে অনুভূতি হয় না কেন? 

আবার একটা জিনিস লক্ষ করে দেখেছেন কি? অন্য কেউ সুড়সুড়ি দিলে যতটা কাতুকুতু লাগে, নিজে বারবার চেষ্টা করলেও সেরকম মনে হয় না।

নিজেকে নিজে কাতুকুতু না দিতে পারার পেছনেও যুক্তি দিয়েছেন বিজ্ঞানীর। এর পেছনে কাজ করে সাধারণত  মানুষের আত্মরক্ষার তাগিদ। কারণ, কাউকে কাতুকুতু দিলেই সে হয় দেহ ভাঁজ করে নেয়, নয়তো নিজেকে এমনভাবে গুটিয়ে নেয় যাতে দেহের কাতুকুতু দেয়া অংশটুকু সংকুচিত হয়ে যায় এবং কাতুকুতু দেয়ার জায়গা না পাওয়া যায়।

বিজ্ঞানীদের মতে,কেউ নিজেই নিজেকে চমকে দিতে পারে না। চমকে যাওয়া এবং অন্য কারও শরীরের অংশ বা বস্তুর স্পর্শ কাতুকুতুর অনুভূতির প্রাথমিক শর্ত। 

কেউ যদি নিজের দেহের সংবেদনশীল অংশে কাতুকুতু দেয়ার কথা ভাবে, তাহলে তার  আগে থেকেই সজাগ হয়ে গিয়ে শরীরের সংশ্লিষ্ট অংশ, কাতুকুতু দেয়ার গতি ও সময়সীমাকে নিয়ন্ত্রণ করে ফেলে। এছাড়া নিজেই নিজেকে কাতুকুতু দিলে মস্তিষ্কও সেভাবে কোনো বিপদের আঁচ করে না। ফলে আত্মরক্ষার তাগিদও আসে না।তাই নিজেকে নিজে সুরসুরি দিলে কোনো অনুভূতি কাজ করে না।


Report This Post

All sources, including information, images, and videos, for our posts are listed here . If there are any copyright claims, please report this post or contact us or mail at info@beeblogquester.com.